প্রশাসন সংস্কার কমিশন কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ হিসেবে গঠনের সুপারিশ করেছে।দেশের পুরনো চার বিভাগকে প্রদেশ করার সুপারিশ
এর পাশাপাশি, কমিশন দেশের পুরনো চারটি বিভাগ—ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনাকে প্রদেশে রূপান্তরের বিষয়টি বিবেচনা করছে।
প্রদেশ গঠনের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য
প্রদেশ গঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ও সেবার মানোন্নয়ন। কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছানো সহজ হবে। এছাড়া, স্থানীয় সম্পদের কার্যকর ব্যবহার, উন্নয়ন প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং স্থানীয় সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে।
সম্ভাব্য সুবিধা
১. প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি: প্রদেশ গঠনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে সিদ্ধান্ত নিতেপারবে, যা দ্রুততা ও কার্যকারিতা বাড়াবে।
সেবার মানোন্নয়ন: স্থানীয় প্রশাসন জনগণের প্রয়োজন ও সমস্যার সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় সেবার মান উন্নত হবে।
উন্নয়ন প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন: স্থানীয় প্রশাসন উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে।
স্থানীয় সম্পদের ব্যবহার: প্রদেশীয় প্রশাসন স্থানীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবে।
চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা
আইনি ও সাংবিধানিক পরিবর্তন: প্রদেশ গঠনের জন্য সংবিধান সংশোধনসহ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
অর্থনৈতিক ব্যয়: নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে অর্থনৈতিক ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন: প্রদেশীয় প্রশাসনের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।
রাজনৈতিক সমন্বয়: প্রদেশ গঠনের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক সমন্বয় ও ঐকমত্য প্রয়োজন।
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া
প্রদেশ গঠনের জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে:
সমীক্ষা ও গবেষণা: প্রদেশ গঠনের সম্ভাব্যতা, সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত সমীক্ষা ও গবেষণা করা।
আইনি প্রক্রিয়া: সংবিধান সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: প্রদেশ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
মানবসম্পদ উন্নয়ন: প্রদেশীয় প্রশাসনের জন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন করা।
জনমত সংগ্রহ: প্রদেশ গঠনের বিষয়ে জনগণের মতামত সংগ্রহ ও বিবেচনা করা।
উপসংহার
বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোতে প্রদেশ গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, যা প্রশাসনিক দক্ষতা ও সেবার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে। তবে, এই প্রক্রিয়ায় আইনি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রদেশ গঠন দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।